মইনপুরির একটি খবর সকলের হৃদয়কে নাড়া দিয়েছে। আরসারা গ্রামে বাড়ির বড় ছেলে পরিবারের সদস্য ও আত্মীয়কে কুপিয়ে হত্যা করেছে। অপরাধ করার পর অভিযুক্ত নিজেও গুলি করে আত্মহত্যা করেছে। শুধু তাই নয়, হত্যার উদ্দ্যেশে স্ত্রী ও মামিকেও হামলা চালায় অভিযুক্তরা। কিন্তু কোনোমতে তার জীবন রক্ষা পায়।বর্তমানে আহত দুই নারীকে আশঙ্কাজনক অবস্থায় সাইফাই মেডিকেল কলেজে ভর্তি করা হয়েছে।
শুক্রবার-শনিবার মধ্যরাতে কিশনি থানার অন্তর্গত আরসারা গোকুলপুর গ্রামে এই নৃশংস হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ঘটে। জানা গেছে যে সুভাষ যাদবের ছোট ছেলে সোনু যাদব এর (৬৫) বৃহস্পতিবার গ্রামেই বিয়ে হয়েছিল। পরিবার এবং আত্মীয়রা বিয়ের বরযাত্রী নিয়ে ইটাওয়া থানার গঙ্গাপুরে গিয়েছিলেন এবং কনেকে বিদায় করে বাড়িতে নিয়ে এসছিলেন।বাড়িতে হাসি-খুশির পরিবেশ ছিল। কিছু আত্মীয় স্বজন চলে গেছে এবং অনেকে এখনও বিয়ে বাড়িতে অবস্থান করছে।শুক্রবার রাত পর্যন্ত ছিল প্রচুর নাচ-গান। খাওয়া-দাওয়া শেষে মেহমান ও বাড়ির লোকজন রুমে ও বারান্দায় ঘুমাতে গেল।এদিকে,...
মধ্যরাতে সুভাষ যাদবের বিবাহিত বড় ছেলে সোহবীর যাদব ঘটনা ঘটিয়েদিল তার নিজের অজান্তে, তার সদ্য বিবাহিত পুত্রবধূকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে বারান্দায় ঘুমন্ত অবস্থায় কেটে ফেলে এবং তারপর তার সদ্য বিবাহিত ছোট ভাই সোনুকে হত্যা করে। যেও একই খাটে ঘুমাচ্ছিল।এর পরে, দানব হয়ে আসা অভিযুক্তটি নেমে আসে এবং তারপরে সে ঘরে ঘুমন্ত অপর ছোট ভাই অভিষেককে নিয়ে শ্যালক রামকৃষ্ণ যাদবকে আক্রমণ করে এবং তাদের হত্যা করে।একই সঙ্গে পরিবারের বন্ধু দীপককেও কুড়াল দিয়ে কুপিয়ে নির্মমভাবে হত্যা করা হয়।
শুধু তাই নয়, ভাঙচুরকারী আসামিরা ঘুমন্ত শাশুড়ি ও স্ত্রীর ওপরও হামলা চালায়। কিন্তু ততক্ষণে ঘরে হাহাকার। তা দেখে অভিযুক্তও নিজেকে গুলি করে আত্মহত্যা করে। চিৎকার শুনে বাড়ির ও বাইরে ঘুমন্ত অন্যান্য লোকজনও জেগে ওঠে।হামলার পর নববিবাহিত দম্পতিসহ ৫ জনের নিঃশ্বাস বন্ধ হয়ে যায়। কিন্তু হামলায় আহত আসামির মামি ও স্ত্রীর তখনও প্রান ছিল। আশেপাশের লোকজনের সহায়তায় উভয় মহিলাকে জেলা হাসপাতালে রেফার করা হয়। যেখানে দুজনেরই গুরুতর অবস্থা দেখে সাইফাই মেডিকেল কলেজে রেফার করা হয়।
বাড়ির প্রধান সুভাষ যাদবের কাছ থেকেও ঘটনার পিছনের কারণ জানার চেষ্টা করেছে পুলিশ। প্রবীণ জানান, তার বড় ছেলে ও খুনি সোহবীর কিশনি শহরের সরকারি হাসপাতাল-এ ফটোকপির কাজ করত। গত কয়েকদিন ধরে দোকানে লোকসানের কারণে স্বজনদের কাছে কিছু টাকাও দাবি করে আসছিলেন। এ নিয়ে বিরোধও দেখা দেয়। যাই হোক, ছোট ছেলের বিয়ে বাড়িতে এলে সব ঠিক হয়ে যায়। হাসি-খুশির পরিবেশ ছিল। নতুন পুত্রবধূ দুদিন ঘরে থাকতে না পেরে ঘটল এত বড় ঘটনা।
পুলিশও যখন ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে, তখন তারা দেখতে পায় যে লোকেরা ঘুমন্ত অবস্থায় নির্মমভাবে হত্যা করেছে, কারণ তাদের কেউ আক্রমণকারীকে প্রতিহত করতে পারে নি বিয়ের অনুষ্ঠানে ক্লান্ত হয়ে পড়ে পুরো পরিবার। আসামি কুড়াল দিয়ে কুপিয়ে ৫ জনকে (দুই ভাই, ভাইয়ের সদ্য বিবাহিতা স্ত্রী, বন্ধু, শ্যালক) হত্যা করে এবং তার খালা ও স্ত্রীকে হত্যার চেষ্টা করে। বাড়িতে গিয়ে দেখা যায়, খাট, বিছানা ও মাটিতে বিকৃত হয়ে পড়ে আছে নিহতদের লাশ। কারও গলা, কারও মাথা, কারও পেট কাটা হয়েছে। চারিদিকে রক্ত ছিল।
পুলিশ বলছে, এই নৃশংস হত্যাকাণ্ডের কারণ সম্পর্কে কিছুই জানা যায়নি। আহত নারীদের কাছ থেকে তথ্য নিলেই কিছু তথ্য পাওয়া যাবে। তবে দুই নারীর অবস্থাই আশঙ্কা হওয়ায় এখনই তাদের বক্তব্য নেওয়া যাচ্ছে না। তবে অন্যান্যদের জিজ্ঞাসাবাদের ভিত্তিতে বিষয়টি তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ। এ বর্বরোচিত ও জঘন্য হত্যাকাণ্ডের খবর পেয়ে এডিজি, আইজি ও এসপিও ঘটনাস্থলে রওনা হয়েছেন।